কম্পিউটারের প্রজন্ম | কম্পিউটার প্রজন্ম কয়টি ও কি কি
কম্পিউটারের প্রযুক্তিগত বিবর্তনকে কম্পিউটার প্রজন্ম বলা হয়।
কম্পিউটারের ৫ টি প্রজন্ম এবং সেগুলো হল: প্রথম প্রজন্ম, দ্বিতীয় প্রজন্ম, তৃতীয় প্রজন্ম, চতুর্থ প্রজন্ম ও পঞ্চম প্রজন্ম।
বায়শন্য ভাল্ব, ট্রানজিস্টর, আইসি চিপ, মাইক্রোপ্রসেসর ইত্যাদি নির্দেশ করে এক, একটি প্রজন্ম।
প্রথম প্রজন্ম ফার্স্ট জেনারেশন 1942 থেকে 1955
11942 সাল থেকে 1955 সাল পর্যন্ত যে সমস্ত কম্পিউটার ব্যবহার করা হতো সেই সমস্ত কম্পিউটার গুলিকে প্রথম কোন প্রজন্মের কম্পিউটার বলা হয় এটি একটি ইলেকট্রিক যন্ত্র
প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য
1 কম্পিউটারের ইলেকট্রনিক এর মুখ্য যন্ত্রাংশ ভ্যাকুয়াম টিউব এটি হলো প্রচুর তাপ উৎপাদনকা
2.প্রজন্মের কম্পিউটার গুলির আকৃতি ছিল সর্ববৃহৎ।
3.এই কম্পিউটার গুলির কাজ করার গতি ছিল অত্যন্ত ধীর অথবা কম।
4.তথ্যের ভিত্তিতে ফল প্রকাশের ক্ষমতা ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের।
৫.এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলো ছিল অত্যন্ত মূল্যবান অনেক দামি।
Examples: ENIAC, EDSAC, EDVAC, UNIVAC-I, IBM 650, IBM 704, IBM 709, Mark, Mark III ইত্যাদি।
দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার 1959-1965 [Second Generations Computer]: 2G
কম্পিউটারে বাল্বের পরিবর্তে ট্রানজিস্টর ব্যবহারের মাধ্যমে দ্বিতীয় প্রজন্মের অবতারণা হয়। ফলে আকার, আকৃতি, কার্যক্ষমতা, পরিচালনা ইত্যাদিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।
এ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে দেয়া হলঃ
- ভ্যাকুয়াম টিউবের পরিবর্তে ট্রানজিস্টরের(Transistor) ব্যবহার শুরু হয়।
- চুম্বকীয় কোর মেমােরির ব্যবহার ও ম্যাগনেটিক ডিস্কের উদ্ভব।
- আকৃতির সংকোচন করে ছোট সাইজের করা হয়।
- উচ্চতাপ সমস্যার সমাধান করা হয় ফলে ডিভাইস কম উত্তপ্ত হত।
- উচ্চ গতিসম্পন্ন ইনপুট ও আউটপুট সরঞ্জাম সংযোজন করা।
- টেলিফোন লাইন ব্যবহার করে ডেটা প্রেরণের ব্যবস্থা চালু এই প্রজন্মে।
- কাজের গতি ও নির্ভরযােগ্যতার উন্নতি ঘটে।
- ফোরট্রান(FORTRAN), কোবল(COBOL) প্রভৃতি ভাষার উদ্ভব, বিকাশ ও ব্যবহার।
- Examples: RCA 501, RCA 301, CDC 1604, NCR 300, GE 200, Honeywell 200, IBM 1400, IBM 1620, IBM 1600 ইত্যাদি।
তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার 1965-1971 [Third Generations Computer]: 3G
কম্পিউটারে IC (Integrated Circuit) বা সমন্বিত চিপ ব্যবহারের মাধ্যমে তৃতীয় প্রজন্মের সূচনা হয়। এতে কম্পিউটারে আরাে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে।
এ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে দেয়া হলঃ
- ইন্টিগ্লেটেড সার্কিট(IC-Integrated Circuit) বা সমন্বিত চিপ ব্যবহৃত হতাে।
- অর্ধপরিবাহী উন্নত স্মৃতি বা মেমােরির উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে।
- উচ্চতর ভাষার প্রচলন শুরু হয় ব্যাপকভাবে।
- উন্নত কার্যকারিতা ও নির্ভরযােগ্যতা দেখা যেত।
- মিনি কম্পিউটারের প্রচলন শুরু এই প্রজন্মে।
- আউটপুট হিসেবে VDU (Video Display Unit) এর আবির্ভাব।
- ডিভিও মনিটর ও লাইন প্রিন্টারের প্রচলন এবং নির্বাহী পদ্ধতির উন্নয়ন ও বিকাশ ঘটে।
- উচ্চতর ভাষায়(High Level Language) প্রোগ্রামিং শুরু হয় এই প্রজন্মে।
- একই সময়ে একাধিক ব্যবহারকারীর কম্পিউটার ব্যবহারের প্রচলন ঘটে।
- SSI, MSI বর্তনী ও আইসি চিপ ইউজ শুরু।
- কম তাপ উৎপন্ন এবং কম রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বিশিষ্ট কম্পিউটারের প্রচলন হয়।
- Examples: IBM 360, IBM 370, PDP-8, PDP-11, GE 600
চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার 1971-Present [Forth Generations Computer]: 4G
চতুর্ব প্রজন্মেই ঘটে কম্পিউটারের বিপ্লব। এ প্রজন্মের কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয় মাইক্রোপ্রসেসর, যেখানে ছােট একটি চিপে কয়েক লক্ষ ট্রানজিস্টর বসানাে সম্ভব। বর্তমান কালের সকল কম্পিউটারই চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার।
এ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে দেয়া হলঃ
- মাইক্রোপ্রসেসর ও মাইক্রোকম্পিউটারের প্রসার ও প্রচলন শুরু।
- বর্ধিত ডেটা ধারণক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটারের উদ্ভাবন।
- প্যাকেজ প্রােগ্রাম এর প্রচলন এই প্রজন্মেই।
- VLSI (Very Large Scale Integration) বা বৃহদাকার একীভূত বর্তনীর ব্যবহার।
- গতি বৃদ্ধি এবং নির্ভরযােগ্যতার উন্নতি সাধন।
- উন্নত চিপ ইউজ করে ক্ষুদ্রাকৃতির কম্পিউটার তৈরি।
- ডাটা আদান প্রদান টেলিযোগাযোগ লাইনের মাধ্যমে।
- WWW, HTML, DVD, i-POD উদ্ভাবন।
- সাইজে খুবই ছোট এবং কম বিদ্যুৎ খরচ হয়।
- মেমরি বা স্মৃতি ধারণক্ষমতা অধিক।
- উদাহরণ: IBM 3033, IBM 4341, TRS80, Sharp PC-1211, HP 3000 ইত্যাদি।
পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার (ভবিষ্যৎ প্রজন্ম) [Fifth Generations Computer]: 5G
মূলত পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এখনাে প্রচলন শুরু হয়নি। আমেরিকা, জাপান, চীন, রাশিয়া এ প্রজন্মের কম্পিউটার আবিষ্কারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এ কম্পিউটারের বিশেষত্ব হলো প্রতি সেকেন্ডে ১০০ থেকে ১৫০ কোটি লজিক সিদ্ধান্ত দিতে পারবে। এ প্রজন্মের কম্পিউটার মানুষের কণ্ঠস্বরের নির্দেশ পালন ক্ষমতাসম্পন্ন হবে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিসম্পন্ন হবে।
এ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে দেয়া হলঃ
- কৃত্রিম বুদ্ধির ব্যবহার/ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন।
- কম্পিউটার বর্তনীতে অপটিক্যাল ফাইবারের (Optical Fiber) ব্যবহার।
- প্রােগ্রাম সামগ্রীর উন্নতি সাধন হবে ব্যাপকভাবে।
- বহু মাইক্রোপ্রসেসর বিশিষ্ট একীভূত বর্তনীর উদ্ভব।
- অধিক শক্তি সম্পন্ন মাইক্রোপ্রসেসর ও মাইক্রোকম্পিউটারের উন্নয়ন।
- শক্তিশালী সুপার কম্পিউটার আবিষ্কার ও ব্যবহার শুরু হবে।
- চৌম্বক বাবল স্মৃতি/ মেমরির ব্যবহার এবং ডেটা সংরক্ষণের ব্যাপক অগ্রগতি সাধন।
- স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ ও শ্রবণযােগ্য শব্দের দ্বারা কম্পিউটারের সাথে সংযোগ স্থাপন।
- কণ্ঠস্বর শনাক্তকরণ ও বিশ্বের সকল ভাষায় কম্পিউটিং সেবা প্রদান।
No comments